আদাবর –শ্যামলী সম্পর্কে
সাধ্যের মধ্যে চাহিদা পূরণে সক্ষম নগরের এমনই একটা এলাকা হচ্ছে আদাবর-শ্যামলী। আর তাই এই অঞ্চলটি মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে অতি জনপ্রিয়।রাজধানী ঢাকার বুকে নাগরিক চাহিদা,আবাসন ব্যাবস্থা,বাণিজ্যিক এলাকা সব দিক দিয়ে এই অঞ্চলটি দিনে দিনে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।সাম্প্রতিক সময়ে প্রচুর আবাসিক ও বাণিজ্যিক অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি হচ্ছে এখানে।
আদাবর-শ্যামলীতে প্রপার্টি
নিকটবর্তী এলাকাগুলোর থেকে তুলনামূলক সাশ্রয়ী হওয়ার কারণে এই অঞ্চলে প্রোপার্টির চাহিদা তুঙ্গে।যেকোন ধরনের ছোট কিংবা বড় সব ধরনের পরিবারের জন্য বেশ আদর্শ এলাকা এটি।তাছাড়া স্কুল-কলেজ কাছাকাছি এবং ঢাকার যেকোন প্রান্তে যাতায়াতের সুব্যাবস্থা থাকায় দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে আদাবর-শ্যামলী অঞ্চল।ঘনবসতি হলেও এটি বেশ পরিকল্পিত এলাকা এবং নিরাপত্তা ব্যাবস্থাও সুন্দর।নগরের অন্য সব এলাকা থেকে এই এলাকার মানুষের পারস্পরিক বন্ধনও চমৎকার।সব মিলিয়ে তাই ধর্মীয় উপসনালয়,পার্ক,বিনোদন কেন্দ্রসহ সক্ল নাগরিক সুবিধার সমন্বয় হয়েছে এখানে।বাণিজ্যিক প্রোপার্টির কথা বললে স্টার্ট-আপ কোম্পানি গুলোর প্রথম পছন্দ এই এলাকাটি।তাছাড়া আইটি ফার্ম,মার্কেটিং এজেন্সি ও এনজিও সমূহ এই এলাকার দিকে ঝুকছে বেশ।ব্যাংক,শপিং মল,কনভেনশন হল সব ধরনের সুবিধা থাকায় কমার্শিয়াল স্পেসের জন্য এলাকাটি পার্ফেক্ট।
যাতায়াত ব্যবস্থা
ঢাকা শহরের সব জায়গায় খুব সহজে যাতায়াত করা যায় বলে যাতায়াত ব্যাবস্থায় আদাবর-শ্যামলী অনন্য।টোকিও স্কয়ারের সামনে থেকে বাসে নিউ মার্কেট,আজীমপুর বা পুরান ঢাকায় সহজে আসা যাওয়া করা যায়।ঢাকা উত্তরের সাথেও যোগসূত্র দারুণ হয়েছে শ্যামলী বাস স্ট্যান্ড থাকায়।শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ধানমন্ডির সাথে আদাবর-শ্যামলোর যাতায়াত ব্যাবস্থা চমৎকার।রিকশায় অতি অল্প সময়ে ধানমণ্ডি কিংবা মোহাম্মদপুর এলাকা চষে বেরানো সম্ভব।মিরপুর রোডের কারণে এই অঞ্চলের যাতায়াত ব্যাবস্থা আরও সুদৃঢ়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
এই অঞ্চলে পলিটেকনিক,ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার ও মাদ্রাসার সংখ্যায় বেশি।তবে শহরের সব বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আদাবর-শ্যামলীর খুব কাছেই।আর ধানমণ্ডি কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত খুব সহজেই করা যায়।
চিকিৎসা সুবিধা
চিকিৎসা ব্যাবস্থায় এলাকাটি বেশ উন্নত।জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট হাসপাতাল,জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাস্পাতাল,জাতীয় কিডনি ও ইউরোলজি ইন্সটিটিউট সহ বেশ নামকরা সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে পরিপূর্ণ আদাবর-শ্যামলী।বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল,কেয়ার হাসপাতাল,ক্রিসেন্ট হাসপাতাল সহ বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে প্রসিদ্ধ এলাকাটি।আর এছাড়াও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অল্প সময়ের পথ এখান থেকে।
চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা
আদাবর-শ্যামলীতে প্রচুর খেলার মাঠ থাকায় অনেক গুলো ক্লাবের সৃষ্টি হয়েছে এখানে।শ্যামলী শিশু পার্ক ও ঢাকা শিশু মেলা রাজধানীর সেরা দুই বিনোদন কেন্দ্র এখানেই।সিনেমা প্রেমীদের জন্য শ্যামলী সিনেপ্লেক্স এক প্রশংসার জায়গা।ঢাকার অন্য যেকোনো এলাকা থেকে চিত্ত বিনোদনে বেশ আকর্ষণীয় আদাবর-শ্যামলী।
মসজিদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান
আদাবর-শ্যামলীএ পুরো এলাকা জুড়েই অসংখ্য মসজিদ মন্দিরে পরিপূর্ণ।শ্যামলী শাহী জামে মসজিদ বেশ বিখ্যাত।জহুরি মহল্লার তপোবন মন্দির,চামেলি রোডে শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির থাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় অঞ্চল এটি।খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যাও এখানে বেশ। আছে প্রিসবাইটেরিয়ান মতো চার্চ।
আশেপাশের এলাকা
ঢাকার উত্তরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল এই আদাবর-শ্যামলী।ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরের খুব কাছে হওয়ায় সুযোগ সুবিধাতেও বেশ এগিয়ে এলাকাটি।মিরপুর রোড ধরে উত্তর দিকে এগিয়ে কল্যাণপুর পার করলেই গাবতলি ও মিরপুর।এ এলাকার পূর্ব দিকে আগারগাঁও-তালতলা আর পশ্চিমে মোহাম্মদপুর ও সাভারের কিছু অঞ্চল।
খাবার ও রেস্টুরেন্ট
ভোজনরসিক মানুষের কাছে এলাকাটি জনপ্রিয় না হলেও এখানে আছে মোস্তকিম ভ্যারাইটিজ কাবাব অ্যান্ড স্যুপ।পুরো ঢাকা শহরে এখানকার কাবাব ও চাপের নামডাক রয়েছে।এ এলাকার আদি নিবাসী বিহারি জনগোষ্ঠীর রন্ধনশৈলীর স্বাদ পেতে নগরের বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়মিত লোকজন আসেন এখানে।বিরিয়ানি-তেহারি ও দেশীয় খাবারের বেশ কয়েকটি হোটেল আছে এখানে।ফার্স্ট ফুড প্রেমিদের জন্য আছে শ্যামলী স্কয়ারের ফুডকোর্ট।তুলনামূলক সাশ্রয়ী দামে মজাদার খাবারের জন্য দিন দিন জনপ্রিয় হতে চলেছে এলাকাটি।
কেনাকাটা
দেশী-বিদেশী ব্রান্ডের আউটলেট সহ বেশ কয়েকটা শপিং মল আছে আদাবর-শ্যামলী অঞ্চলে।টোকিও স্কয়ার,শ্যামলী স্কয়ারের নামডাক পুরো শহর জুড়ে।আর অনেক গুলো সুপারশপ আর ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থাকায় এ এলাকার লোকদের বাইরে যেতে হয় না।বরং বাইরের এলাকার লোকজন আসেন এখানে কেনাকাটা করতে।