মোহাম্মদপুর সম্পর্কে
ইতিহাস ঐতিহ্য এবং সুন্দর সুসজ্জিত এই সব কিছুর সমন্বিত এক এলাকা মোহাম্মদপুর। মোহাম্মদপুর ঢাকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ এলাকার একটি। সেই ১৯৫৪ সালে ঢাকার প্রথম আবাসিক এলাকা হিসেবে যাত্রা শুরু হয়েছিলো মোহাম্মদপুরের। এখানকার বাসিন্দারা নাগরিক জীবন,সার্বিক স্বাচ্ছন্দতায় বেশ আলাদা অন্য এলাকার মানুষদের থেকে।ইতিহাস ঐতিহ্যের পাশাপাশি এখানে আছে দেশের সেরা কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,স্বাস্থ্যসেবা ব্যাবস্থা। সব মিলিয়ে মোহাম্মদপুর ঢাকার জনপ্রিয় এলাকা সমূহের অন্যতম।
মোহাম্মদপুরে প্রপার্টি
মোহাম্মদপুর আবাসিক এলাকা হিসেবে গড়ে উঠেছে সেই পঞ্চাশের দশকে। উচ্চ-মধ্য আয়ের মানুষের অন্যতম প্রিয় জায়গা মোহাম্মদপুর। মোহাম্মদপুরের বাসীন্দাদের মধ্যে চমৎকার সামাজিক বন্ধন লক্ষনীয়। বর্তমান সময়ে মোহাম্মদপুর বর্ধিত হয়ে বসিলা এবং আশপাশের অঞ্চলে প্রসারিত হয়েছে বটে। আবাসিক প্রপার্টির পাশাপাশি বাণিজ্যিক দিক দিয়েও মোহাম্মদপুরের সুনাম বিস্তৃত। যাতায়াত প্রয়োজনীয় সব কিছুর সহজলভ্যতা,ধানমন্ডির সান্নিধ্যতা এবং উত্তম যোগাযোগ ব্যাবস্থা মোহাম্মদপুরকে গড়ে তুলেছে এক অনন্য এলাকা হিসেবে। বাংলাদেশের বৃহত্তম এপার্টমেন্ট ব্লক জাপান গার্ডেন সিটি এই মোহাম্মদপুরেই অবস্থিত। বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি,কাদেরাবাদ হাউজিং,চান মিয়া হাউজিংয়ের মতো চমৎকার সব আবাসন প্রকল্পের কারণে আবাসনে মোহাম্মদপুর হয়ে উঠেছে অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
যাতায়াত ব্যবস্থা
মোহাম্মদপুরের বাসস্টপ কয়েক ডজনখানেক ভিন্ন ভিন্ন রুটের পাবলিক বাসের স্টপেজ। শহরের যেকোন প্রান্তে সহজেই পৌছে যাওয়া সম্ভব। মোহাম্মদপুরের সাথে ঢাকার অনান্য এলাকার যোগাযোগ এতোটাই সমৃদ্ধ যে এখানকার বাসীন্দাদের মোহাম্মদপুর থেকেই যেকোন গন্তব্যে রওনা হতে পারেন। আর এলাকার অভ্যন্তরে রিকশা অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি বাহন। তাজমহল রোড খুবই ব্যাস্ততম সড়কের একটি। টুকটাক ট্রাফিক জ্যাম লেগে থাকে এখানে। আসাদগেট এলাকাটি এক ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত। আর কাছাকাছি গাবতলি বাস টার্মিনাল থাকায় শহরের বাইরেও দারুণ যোগাযোগ নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
ঢাকার প্রাচীনতম এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় স্কুল কলেজের ঘাটি বলা চলে মোহাম্মদপুর। মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়,মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজ,সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের মতো নামকরা প্রতিষ্টানের দেখা মিলবে এখানে। এছাড়া ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্যেও খ্যাতি আছে মোহাম্মদপুরে। গুণাগুণ মান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যায় এগিয়ে থাকায় এখানকার বাসীন্দাদের সুশিক্ষা ব্যাবস্থার জন্য চিন্তার ভাজ ফেলতে হয় না বললেই চলে।
চিকিৎসা সুবিধা
কেয়ার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল,ঢাকা জেনারেল ও অর্থোপেডিক হাসপাতাল এবং ট্রমা সেন্টারের স্বাস্থ্যসেবার মান শীর্ষ পর্যায়ের।আল মারকাজুল ইসলামী হাসপাতালও বেশ জনপ্রিয় এখানকার মানুষদের কাছে। ধানমন্ডির নিকটতষ্ট হওয়ায় সেখানলার সেবা প্রতিষ্ঠান গুলোর সুবিধা ভালো মতোই কাজে লাগাতে পারেন এখানকার বাসীন্দারা।
মসজিদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান
ঐতিহাসিক সাত গম্বুজ মসজিদ মোহাম্মদপুরেই অবস্থিত।শায়েস্তা খান কর্তৃক নির্মিত মসজিদটি আজও চমৎকার স্থাপত্যশৈলী নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঢাকার বুকে। তাছাড়া মোহাম্মদপুরের অলি গলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য মসজিদ। এলাকার আশেপাশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কয়েকটি মন্দিরও আছে।
আশেপাশের এলাকা
মোহাম্মদপুরের উত্তরে ও দক্ষিণে আছে লালমাটিয়া,ধানমন্ডি,শ্যামলী। আর পূর্বে রয়েছে শের-ই-বাংলা নগর।ঢাকার প্রধান ও প্রাচীনতম এলাকা গুলোর মধ্যেই অবস্থান মোহাম্মদপুরের।মিরপুর,ফার্মগেটও বেশ নিকট বর্তী মোহাম্মদপুর থেকে। সদরঘাট-গাবতলী৷ বাইপাস সড়ক দয়ে ঢাকার অভ্যন্তরে এমনকি পুরান ঢাকাতেও ভ্রমণ করা সম্ভব।
খাবার ও রেস্টুরেন্ট
শুধুমাত্র মোহাম্মদপুরের বিখ্যাত খাবারের নাম বলতে থাকলে সহসাই শেষ করা যাবে না। মোস্তাকিমের চাপ,বোবার বিরিয়ানি সারাদেশব্যপী বিখ্যাত। মোহাম্মদপুরে আসার সু্যোগ হলে এএখানকার খাবার খেতে ভোলেন না কেউই। এখানকার কাবাব ও বিরিয়ানির দোকানগুলো বেশ সমৃদ্ধ ও নামকরা। আমাদের আন্তঃঅহাদেশীয় এবং প্রাচ্যের সমস্ত খাবার পাওয়া যায় এই এলাকায়।ইদানীং কালে বেশ কিছু আধুনিক রেস্ট্রুরেন্টের দেখা মিলছে মোহাম্মদপুরে।
কেনাকাটা
টোকিও স্কয়ার মোহাম্মদপুরে শপিংয়ের সেরা গন্তব্য। নানান রকম দেশি-বিদেশি ব্রান্ডের কালেকশন পাওয়া যাবে এখানে। প্রতিদিনের চাহিদা মেটাতে মোহাম্মদপুর বাসীর ভরসার জায়গা হচ্ছে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট। ছোট ছোট ডিপার্টমেন্টাল স্টোর পাওয়া যাবে আশেপাশেই।